ভোটের দিন ভয়ঙ্কর খেলা খেলবো : জনসভা মঞ্চে হুঁশিয়ারী কেষ্ট মন্ডল এর

6th April 2021 10:26 pm বর্ধমান
ভোটের দিন ভয়ঙ্কর খেলা খেলবো : জনসভা মঞ্চে হুঁশিয়ারী কেষ্ট মন্ডল এর


আমিরুল ইসলাম ( ভাতার ) :  অষ্টম দফায় অর্থাৎ আগামী  ২৯ এপ্রিল হবে এই রাজ্যের বীরভূম জেলার সব কটি আশনে নির্বাচন।তার প্রাক্কালে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে অনুষ্ঠিত তৃণমূলের নির্বাচনী জনসভা থেকে অনুব্রত মণ্ডল ঘোষণা করলেন ,“ভোটের দিন তিনি ভয়ংকর খেলা খেলবেন“। প্রকাশ্য জনসভা থেকে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের এই ঘোষণা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে । 
ভাতারের বিজেপি প্রার্থী মহেন্দ্রনাথ কোঙার যদিও অনুব্রত মণ্ডলের এই  হুংকারকে ‘ফাঁকা আওয়াজ’ বলে কটাক্ষ করেছে ।  ভাতার বিধানসভা আশনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে মানগোবিন্দ অধিকারীকে । তারই সমর্থনে মঙ্গলবার নির্বাচনী জনসভা  অনুষ্ঠিত হয় ভাতার হাই স্কুল মাঠে ।সেই জনসভার প্রধান ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল । ভিড়ে ঠাসা জনসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও নরেন্দ্র মোদীর কড়া সমালোচনা করেন । পাশাপাশি জনসভা থেকে 
অনুব্রত মণ্ডল ঘোষনা করেন ,“হ্যাঁ খেলা হবে ।  একশো বার খেলা হবে। এই মাটিতেই খেলবো। বারবার খেলবো । ভোটের পরেও খোলবো । ভোটের দিন ভয়ংকর খেলবো“ ।  তিনি এও বলেন, ’বিজেপি খেলা জানে না । ভোটের দিন তৃণমূল খেলবে মাঠের মধ্যে।আর ওরা ( বিজেপি )থাকবে মাঠের বাইরে।ওরা শুধু হিন্দু মুসলিমে বিভেদ সৃষ্টি করে। মমতাকে কটু কথা বলছে।অপমান করছে । কেউ আবার মমতাকে বেগম বলছে।বাংলার মানুষ এসবের  জবাব ভোটে দেবে বলে অনুব্রত মন্তব্য করেন’ ।  অনুব্রত মণ্ডলের মুখ থেকে এমন ঘোষনা শুনে  কার্যতই উচ্ছাসে ফেটে পড়েন জনসভায় উপস্থিত থাকা তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকরা । তবে শুধু ভোটের দিন ‘ভয়ংকর খেলবেন’ এইটুকু বলেন অনুব্রত খান্ত হননি । একই সঙ্গে প্রত্যয়ী অনুব্রত মণ্ডল সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন , “এবারের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ২২০ থেকে ২৩০ টি আশন পাবে । এছাড়াও তৃতীয় দফার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস  ৩১ টার আশনের মধ্যে ৩০ টা সিট পাবে ।একইসঙ্গে  তিনি জানিয়ে দেন,’ বাংলায় ফের তৃণমূলই  সরকার গড়বে । 

কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে অনুব্রত মণ্ডল বলেন ,’নরেন্দ্র মোদির দাড়ি যত বাড়ছে, পেট্রোল-ডিজেলের দামও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে"।ভোটের জন্য বিজেপি বাইরে থেকে লোক আনছে বলে অনুব্রত অভিযোগ করেন । নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে অনুব্রত আরও বলেন , মোদী ত্রিপুরাকে শেষ করে দিয়েছে ।দশ হাজার ছেলের চাকরী খেয়ে নিয়েছো।প্রাইমারী স্কুলের চাকরী খেয়ে নিয়েছো।গ্রুপ ‘সি’ ও  গ্রুপ ‘ডি ’গ্রুপের চাকরি  কনট্রাকটরের হাতে দিয়ে দিয়েছে। অনুব্রতর দাবি ,মোদী পকেট ভরে মিথ্যা কথা নিয়ে বাংলায় আসো।আর মমতা ব্যান্দ্যোপাধ্যায়  আঁচল ভরে উন্নয়ন করে।লকডাউনে মমতা চাল ‘ফ্রি’ করে দিয়েছে মমতা। জনসভা থেকে  অনুব্রত ঘোষনা করেন ,এখানে ‘এনআরসি’ করতে দেবো না।তার জন্য আন্দোলন করবো।মৃত্যু বরণ করবো।তবু ’এনআরসি’ করতে দেবন না বলে এদিন  হুঁশিয়ারী দেন অনুব্রত মণ্ডল। পাশাপাশি নাম না করে তিনি শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করেন ।  বলেন,’আমি নেতা নই, আমি একজন তৃণমূল  কর্মী।আমি নেতা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে পালিয়ে যেতাম।ঠকিয়ে দিয়ে চলে যেতাম।বেগম বলতাম।কটু কথা বলতাম’।  বীরভূমের দুবরাজপুরের খনের ঘটনা প্রসঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল বলেন ,যিনি খুন হয়েছেন তিনি বিজেপি করতেন। তাঁকে বিজেপিরই একজন কর্মী খুন করেছে । বিজেপি এই ঘটনা নিয়ে নোংরামি করছে বলে অনুব্রত মণ্ডল এদিন সাফ জানিয়ে দেন । 

 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।