আমিরুল ইসলাম ( ভাতার ) : অষ্টম দফায় অর্থাৎ আগামী ২৯ এপ্রিল হবে এই রাজ্যের বীরভূম জেলার সব কটি আশনে নির্বাচন।তার প্রাক্কালে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে অনুষ্ঠিত তৃণমূলের নির্বাচনী জনসভা থেকে অনুব্রত মণ্ডল ঘোষণা করলেন ,“ভোটের দিন তিনি ভয়ংকর খেলা খেলবেন“। প্রকাশ্য জনসভা থেকে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের এই ঘোষণা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে ।
ভাতারের বিজেপি প্রার্থী মহেন্দ্রনাথ কোঙার যদিও অনুব্রত মণ্ডলের এই হুংকারকে ‘ফাঁকা আওয়াজ’ বলে কটাক্ষ করেছে । ভাতার বিধানসভা আশনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে মানগোবিন্দ অধিকারীকে । তারই সমর্থনে মঙ্গলবার নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয় ভাতার হাই স্কুল মাঠে ।সেই জনসভার প্রধান ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল । ভিড়ে ঠাসা জনসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও নরেন্দ্র মোদীর কড়া সমালোচনা করেন । পাশাপাশি জনসভা থেকে
অনুব্রত মণ্ডল ঘোষনা করেন ,“হ্যাঁ খেলা হবে । একশো বার খেলা হবে। এই মাটিতেই খেলবো। বারবার খেলবো । ভোটের পরেও খোলবো । ভোটের দিন ভয়ংকর খেলবো“ । তিনি এও বলেন, ’বিজেপি খেলা জানে না । ভোটের দিন তৃণমূল খেলবে মাঠের মধ্যে।আর ওরা ( বিজেপি )থাকবে মাঠের বাইরে।ওরা শুধু হিন্দু মুসলিমে বিভেদ সৃষ্টি করে। মমতাকে কটু কথা বলছে।অপমান করছে । কেউ আবার মমতাকে বেগম বলছে।বাংলার মানুষ এসবের জবাব ভোটে দেবে বলে অনুব্রত মন্তব্য করেন’ । অনুব্রত মণ্ডলের মুখ থেকে এমন ঘোষনা শুনে কার্যতই উচ্ছাসে ফেটে পড়েন জনসভায় উপস্থিত থাকা তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকরা । তবে শুধু ভোটের দিন ‘ভয়ংকর খেলবেন’ এইটুকু বলেন অনুব্রত খান্ত হননি । একই সঙ্গে প্রত্যয়ী অনুব্রত মণ্ডল সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন , “এবারের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ২২০ থেকে ২৩০ টি আশন পাবে । এছাড়াও তৃতীয় দফার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ৩১ টার আশনের মধ্যে ৩০ টা সিট পাবে ।একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন,’ বাংলায় ফের তৃণমূলই সরকার গড়বে ।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে অনুব্রত মণ্ডল বলেন ,’নরেন্দ্র মোদির দাড়ি যত বাড়ছে, পেট্রোল-ডিজেলের দামও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে"।ভোটের জন্য বিজেপি বাইরে থেকে লোক আনছে বলে অনুব্রত অভিযোগ করেন । নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে অনুব্রত আরও বলেন , মোদী ত্রিপুরাকে শেষ করে দিয়েছে ।দশ হাজার ছেলের চাকরী খেয়ে নিয়েছো।প্রাইমারী স্কুলের চাকরী খেয়ে নিয়েছো।গ্রুপ ‘সি’ ও গ্রুপ ‘ডি ’গ্রুপের চাকরি কনট্রাকটরের হাতে দিয়ে দিয়েছে। অনুব্রতর দাবি ,মোদী পকেট ভরে মিথ্যা কথা নিয়ে বাংলায় আসো।আর মমতা ব্যান্দ্যোপাধ্যায় আঁচল ভরে উন্নয়ন করে।লকডাউনে মমতা চাল ‘ফ্রি’ করে দিয়েছে মমতা। জনসভা থেকে অনুব্রত ঘোষনা করেন ,এখানে ‘এনআরসি’ করতে দেবো না।তার জন্য আন্দোলন করবো।মৃত্যু বরণ করবো।তবু ’এনআরসি’ করতে দেবন না বলে এদিন হুঁশিয়ারী দেন অনুব্রত মণ্ডল। পাশাপাশি নাম না করে তিনি শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করেন । বলেন,’আমি নেতা নই, আমি একজন তৃণমূল কর্মী।আমি নেতা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে পালিয়ে যেতাম।ঠকিয়ে দিয়ে চলে যেতাম।বেগম বলতাম।কটু কথা বলতাম’। বীরভূমের দুবরাজপুরের খনের ঘটনা প্রসঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল বলেন ,যিনি খুন হয়েছেন তিনি বিজেপি করতেন। তাঁকে বিজেপিরই একজন কর্মী খুন করেছে । বিজেপি এই ঘটনা নিয়ে নোংরামি করছে বলে অনুব্রত মণ্ডল এদিন সাফ জানিয়ে দেন ।